আমি বিনিত ভাবে বলতে চাচ্ছি আমি, মেজর মোঃ আখতারুজ্জামান কিশোরগঞ্জ ২(কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে ট্রাক প্রতিকের নির্বাচনে পরাজয় আমার ব্যক্তিগত মতে মূলত ৩টি কারন। যথাঃ
১।নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে এসে আমার প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদ সাহেবের সমর্থন নৌকার প্রতি পরিবর্তন ।
২।দুইটি উপজেলার প্রায় সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের বিশ্বাসঘাতকতা ও নুর মোহাম্মদ সাহেবের বক্তব্য ও সমর্থন নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে নির্বাচনের আগের ভোররাত্রে নৌকাকে পাশ করানোর জন্য ঈগলে ভোট দিতে আহ্বান ও বিএনপিকে ভোট দিতে বারন।
৩।বিএনপির ও সাধারন নিরপেক্ষ জনগণকে ভোট দিতে বাধা দেয়া ও রাস্তায় প্রতিবন্দকতা সৃষ্টি করতে নৌকা ও ঈগলে মিলে বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে উৎসাহিত ও সহায়তা করা।নির্বাচনে জয় ও পরাজয় সুনিশ্চিত। শুধুমাত্র একজন জয়লাভ করবে আর বাকিরা হারবে।এবারের নির্বাচনে একবারের জন্যও কাওকে বলি নাই যে জনগণ ভোট না দিলে নির্বাচনে আমি জয়লাভ করবো।আমি আপ্রান চেষ্টা করেছি জনগণকে ভোটে আনতে।কিন্তু জনগণকে অবান্তর কারনে ভোট দিতে নিয়ে আসতে পারি নাই।আমি বার বার বলেছি জনগণকে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে যাতে জনগণের ভোট কেউ যেন এবার ছিনতাই করে না নিতে পারে।আমি জনগণকে এও বুজানোর চেষ্টা করেছি যে যদি আমি সরকারের পাতানো বা ডামী নির্বাচনে অংশগ্রহন করতাম তাহলে ঘরে ঘুমায়ে থেকে জয়ী হতে পারতাম।কিন্তু বার বার বলেছি আমি কারো দয়ায় বা সাহায্যে বা প্রশাসনের কোন সহায়তায় জয়ী হতে চাই না এবং হবোও না। আমি শুরু থেকেই বলে আসছিলাম জনগণের প্রত্যক্ষ ও অংশগ্রহনমূলক সুষ্ট, অবাদ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে হবে যাতে জনগণ স্ব ইচ্ছায় ও নিরাপদে কেন্দ্রে এসে স্বহস্তে তাদের ভোটটি দিতে পারে।সরকার ও নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ যে তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সুষ্ট ও অবাদ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পেরেছি, সেই সঙ্গে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতাও বজায় রেখেছে।কিন্তু তারা নির্বাচন অংশগ্রহনমূলক করতে পারে নাই।যার ফলে বিএনপির ৩০% ভাগ ও দল নিরপেক্ষ আরো ৪০% ভাগ তথা ৭০% ভাগ ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে আনা সম্ভব হয় নাই।মূলত ভয়ভীতি ও বাধার কারনে ৭০%ভাগ ভোট কেন্দ্রে আসে নাই যার বৃহৎ অংশ ছিল আমাকে ভোট দেয়ার পক্ষে।
আমি নির্বাচনে ব্যাপক প্রচার ও প্রচারনা চালিয়েছিলাম যাতে বিপুল সংখ্যক ভোটার সাড়া দিয়েছিল।আমার ১জানুয়ারী ২০২৪ তারিখ পাকুন্দিয়ার ঈদগাহ ময়দানে বিশাল জনসভায় সকল মহলের ভাষ্যমতে শুধু পাকুন্দিয়ার ৪০ হাজার ভোটার উপস্থিত ছিল। একইভাবে ০৪ জানুয়ারী ২০২৪ তারিখ কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা স্কুলের বিশাল খেলার মাঠে আমার জনসভায় শুধুমাত্র কটিয়াদি উপজেলার ৭০ হাজারেরও বেশি ভোটার উপস্থিত ছিল। সব মিলে উপস্থিত ভোটারের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ১০ হাজারেরও বেশি।
আমি কটিয়াদি উপজেলার ৫৮৯টি ভোট কক্ষের জন্য ৫৮৯ জন ও পাকুন্দিয়া উপজেলার ৪৮০টি কক্ষের জন্য ৫৮০ জন নির্বাচনী এজেন্ট নিজ হাতে তাদেরকে একদিনের ভাতা দিয়ে নিয়োগ দিয়ে ছিলাম।
আমার ট্রাক প্রতি যেভাবে জনসমর্থন ও জনজোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল যদি স্থানীয় সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদ সাহেবের সমর্থনের ব্যপারে বিভ্রান্তি না ছড়াতো, চেয়ারম্যানগন একযোগে বিশ্বাসঘাতকতা না করতো তাহলে অন্তত আরো ৪০ হাজার ভোট ট্রাক মার্কায় পড়তো। এছাড়াও বিএনপির ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে যদি আসতে বাধা না দিত তাহলে অন্তত আরো লক্ষাধিক জনগণ ভোট দিতে কেন্দ্রে আসতো যার শতভাগ ভোট ট্রাক মার্কায় পড়তো।
যাইহোক, আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদ সাহেবের আমার প্রতি প্রাথমিক সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞ এবং উনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
আমি পাকুন্দিয়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হাজী মকবুল সাহেবের সমর্থন ও সকল সাহায্য সহযোগিতার জন্য আমি আজীবন উনার কাছে ঋণি থাকবো এবং ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে বহুগুনে তা পরিশোধ করার চেষ্টা করবো।
তবে বিশ্বাসঘাতক সকল চেয়ারম্যানদের প্রতি থাকলো আমার চরম ঘৃনা ও ধিক্কার। ওরা লোভী, মিথ্যুক ও কুটিল। তাদের থেকে সবাই সাবধান থাকবেন।
পরিশেষে আমার বিনিত নিবেদন, পরাজয়ের সকল দায় আমার একক। আমার ব্যর্থতার জন্য আমি আমার কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে পারি নাই যার দায় শুধুমাত্র আমার এবং এর জন্য কোন অবস্থাতেই অন্য কেউ দায়ি নয়।
আমার নির্বাচনে যারা পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতিও রইলো আমার কৃতজ্ঞতা এবং সবাইকে জানাই ধন্যবাদ।
এত প্রতিকুলতার মধ্যেও যারা তাদের মহামুল্যবান ভোটটি দিয়েছেন তাদের প্রতি থাকবে আমার আজীবনের কৃতজ্ঞতা। জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত আমি তাদের পাশে থাকবো।
যারা আমাকে সামাজিক মিডিয়াতে মনে ইচ্ছামত গালাগাল করেছেন তাদের প্রতিও আমার ধন্যবাদ।কারন আপনাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও গুরুত্বহীন ব্যক্তিগত অবস্থান আমাকে প্রচন্ড দৃঢ়তা দেয় যে আমি সঠিক পথেই চলছি এবং চূড়ান্ত পরাজয় তাদেরই হবে।
সবাই ভাল থাকার চেষ্টা করবেন যদিও এর সুযোগ অনেক সীমিত হয়ে আসছে।