আমরা কী ভুল পথে হাঁটছি? উত্তর হতে পারে না, আবার হতেও পারে হ্যাঁ।
সম্মানিত একটা পেশা হলো শিক্ষকতা। শিক্ষকরা সমাজের পথপ্রদর্শকও বটে। বর্তমান সময়ে বিল্পবের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে যে পরিবর্তন হয়েছে তা প্রশংশনীয়। এই বিপ্লবে ছাত্ররা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তারা আন্দোলন করেছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারীতার বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা আবার সে অন্যায়, স্বৈরাচারীতা কিংবা বৈষম্যের পথ কী ধরছে?
শিক্ষকরা লাঞ্চিত বঞ্চিত ও অপদস্ত হচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায় ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে যা অত্যান্ত জঘন্যতম কাজ। বিভিন্নভাবে যুক্তিতর্ক করে এগুলোকে বৈধতা দেওয়ার কোন উপায় নেই।
বাংলাদেশ একটি গনতান্ত্রিক দেশ। এই দেশে সবার কোন না কোন একটি দলের সাথে আদর্শিক সমর্থন থাকতে পারে এবং থাকাটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু অতি সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষক লাঞ্চিত হওয়াটা কোন ভালো বার্তা বহন করছে না। আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করব বলে যদি নিজেরাই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাই তাহলে দেশে শান্তি ফিরবে কিভাবে?
ছাত্রদের প্রতি আগে তাদের ব্যবহার খারাপ ছিলো বা প্রতিষ্ঠান ধ্বংসে তাদের হাত ছিলো এমন কোন কারণ থাকলেও সরাসরি তাদেরকে অপদস্ত করার প্রয়োজন নেই। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। কিছু কিছু জায়গায় কেউ কেউ নিজে থেকে পদত্যাগ করার পরে ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষককে থেকে যেতে বলছেন এমনকি কান্নাকাটি করছেন। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় জোরপূর্বক স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।
কিছু কিছু শিক্ষককে অবশ্য সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নিজেদের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে শিক্ষকদের এসব করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
মনে রাখতে হবে ছাত্ররা সকল ক্ষমতার মালিক নয়। বর্তমান সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি ছাত্ররা একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হয়ে যাচ্ছেন যা মোটেও ভবিষ্যতের জন্য ভালো নয়।
বৈষম্য দূর হোক সকল ক্ষেত্রে, সকল জায়গায়। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সরকার হোক প্রকৃতপক্ষেই গণমানুষের সরকার, সাম্যের সরকার। যেকানে অপরাধী আইন ধারা অপরাধী সাবস্ত হবে এবং বিচারের আওতায় আসবে। সকলের জন্য আইন হোক সমান। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কিংবা জামাতে ইসলামি দেখে যেন কোন বিচারিক কার্য সম্পন্ন না হয়।
লেখক: আরমান জিহাদ -প্রাবন্ধিক ও ছড়াকার