ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি থাকার অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানিয়েছে, তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ বাড়ি থাকার বিষয়ে মঙ্গলবার অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে কমিশন। টিমের অপর সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক মাহবুব আলম।
মূলত গত ৯ জানুয়ারি দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। ওই প্রতিবেদনের ওয়াসার এমডির যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ বাড়ির তথ্য দিয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করেছে, সেটির উপর ভিত্তি করে হাইকোর্ট অভিযোগের অগ্রগতি জানতে চেয়ে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেন।
তাকসিম এ খানের নামে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ বাড়ির অভিযোগ ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি বড় অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ অনুসন্ধান করেছিল দুদক। এর মধ্যে ওয়াসায় নিয়োগ বাণিজ্য, গুলশান-বারিধারা লেক দূষণ রোধ প্রকল্পে অনিয়ম, ওয়াসার পদ্মা জলদিয়া প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প, গন্ধবপুর পানি শোধনাগার ১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। সম্প্রতি ঢাকা ওয়াসায় অভিযানও পরিচালনা করেছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
সংবাদপত্রে যুক্তরাষ্ট্রের তার ১৪ বাড়ি থাকার বিষয়ে গত ১০ জানুয়ারি ওয়াসা ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাকসিম এ খান। নিজের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন তিনি। এসব তার শত্রুরা করিয়েছে বলেও ধারণা তার।
তাকসিম এ খান বলেছেন, ‘ঢাকা ওয়াসায় এক টাকাও দুর্নীতি হয়নি, জীবনে এক টাকাও হারাম খাইনি। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অসত্য।’
তাকসিম এ খান বলেন, ‘আমি এক টাকাও হারাম খাইনি, দুর্নীতি করিনি। এখন আমার বিরুদ্ধে যতই অভিযোগ তুলুক, আমার কোনো ভয় নেই। যেহেতু আমি জানি, আমি সৎ, তাহলে আমার ভয় বা লজ্জার কী আছে! আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অসত্য। আল্লাহর রহমতে হাইকোর্ট সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন।’
গত এক যুগেরও বেশি সময় তাকসিম এ খান ওয়াসার এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ছয় বার মেয়াদ বাড়িয়ে তাকেই ওয়াসায় এমডি হিসেবে রাখা হয়। বিতর্ক রয়েছে তার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও। ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগের যেসব অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছিলো তার বেশির ভাগই ছিল না ওয়াসার এই এমডির।
সূত্র: দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশ